ঢাকা ২৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৩ পৌষ ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

বাতাসে যেন ঝরছে আগুনের ফুলকি, তাপমাত্রা ৪০ দশমিক ৫ ডিগ্রি 

বাতাসে যেন ঝরছে আগুনের ফুলকি, তাপমাত্রা ৪০ দশমিক ৫ ডিগ্রি 

বৈশাখের প্রথম দিন থেকেই পাবনার ঈশ্বরদীর ওপর দিয়ে বইছে মাঝারি তাপপ্রবাহ। ঘরে-বাইরে অসহ্য গরম। বাতাসে বইছে হল্কা। কড়া রোদ, উষ্ণ বাতাস আর তীব্র দাবদাহে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন। বিশেষ করে যারা জীবিকার তাগিদে ঘরের বাইরে বের হচ্ছেন, তারা আছেন সবচেয়ে বিপাকে। পেটের দায়ে বাধ্য হয়ে রোদ-গরম উপেক্ষা করে কাজ করতে হচ্ছে নিম্ন আয়ের মানুষকে।

ঈশ্বরদী আবহাওয়া অফিসের টেলি প্রিন্টার সুপারভাইজার আব্দুর রাজ্জাক জানায় বুধবার ( ১৭ এপ্রিল) বিকেল তিনটায় ঈশ্বরদীতে তাপমাত্রা ৪০ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে । চলতি মওসুমে এ পর্যন্ত এটিই ঈশ্বরদীর সর্বোচ্চ তাপমাত্রা।

প্রতিদিনই যেন বাড়ছে দিনের তাপমাত্রা। ঈশ্বরদীতে রোদ যেন আগুনের ফুলকি হয়ে ঝরছে। আগুন ঝরা রোদের তেজে বাইরে বের হওয়া মুশকিল হয়ে পড়ছে। এ অবস্থা বিরাজ করছে সূর্য একেবারে পাটে পড়ার আগ পর্যন্ত। ঈশ্বরদীতে গরমের কারণে বাসা থেকে বের হচ্ছেননা অনেকে। তাই দুপুরের আগেই ফাঁকা হয়ে যাচ্ছে প্রধান সড়কগুলো। অনেকে ছায়া পেলেই সেই স্থানে দাঁড়িয়ে শরীরকে ঠান্ডা করার চেষ্টা করছেন।

রিকশাচালক আবেদ মিয়া বলেন, বৈশাখের এই তীব্র রোদের কারণে রিকশা চালাতে কষ্ট হচ্ছে। এত গরম যে রাস্তায় দাঁড়ানো কঠিন হয়ে যাচ্ছে। গরমের কারণে মানুষ কম বের হচ্ছে। ফলে ভাড়াও কমে গেছে।

ঈশ্বরদী আবহাওয়া অফিস জানায়, বুধবার (১৭ এপ্রিল) ঈশ্বরদীতে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৪০ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। মঙ্গলবার ( ১৬ এপ্রিল) বিকেল ৩ টায় ঈশ্বরদীতে তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৩৯ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ১৫ এপ্রিল বিকাল ৩টায় ঈশ্বরদীতে ৩৯ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৪ এপ্রিল) ঈশ্বরদীতে ৩৮ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে।

এর আগে ১ এপ্রিল ৩৯ ডিগ্রি তাপমাত্রা ঈশ্বরদীতে রেকর্ড করা হয়। শনিবার (৬ এপ্রিল) বিকেল ৩ টায় ঈচ্বরদীতে সর্বোচ্চ ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। অন্য বছর আবহাওয়ার কিছুটা তারতম্য লক্ষ্য করা গেলেও এবার এপ্রিলের শুরুতেই সর্বোচ্চ তাপমাত্রায় পুড়ছে ঈশ্বরদী। গরম বাতাস যেন শরীরে বিঁধছে আগুনের হল্কার মত। তীব্র গরমে রাতে ফ্যান চালিয়েও ঘুমাতে পারছে না মানুষ। দিনে বাইরে যেন আগুনের হল্কা।

তাপপ্রবাহের কারণে দুপুরের পর প্রধান প্রধান সড়ক ফাঁকাই থাকছে। গরমে অনেককে ক্লান্ত শরীরে গাছের ছায়ায় বসে থাকতে দেখা যাচ্ছে। গত কয়েক দিনের তাপদাহে শহরের পোস্ট অফিস মোড় সংলগ্ন ঈশ্বরদী-পাবনা মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে বিটুমিন গলে যেতে শুরু করেছে। এতে সড়কে চলাচলকারী যানবাহনের চাকায় পিচ আটকে যাচ্ছে। ফলে চালকরা ধীর গতিতে গাড়ী চালাচ্ছে।

তীব্র খরায় ভূ-গর্ভস্থ পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় টিউবওয়েলে পানি উঠছে না। ফলে উপজেলাজুড়ে তীব্র পানি সংকট দেখা দিয়েছে। পৌর সভার পানি বিভাগের সহকারি প্রকৌশলী প্রবীর বিশ্বাস বলেন, সাপ্লাই লাইনে পানি সরবরাহের জন্য সবকটি মেশিন চালিয়েও পানি সরবরাহ করতে কষ্ট হচ্ছে। খরা মৌসুমের শুরুতেই এবারে ভূগর্ভস্থ পানির স্তর অনেক নীচে নেমে গেছে।

ঈশ্বরদী আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হেলাল উদ্দিন জানান, ২৮ মার্চ থেকে ঈশ্বরদীসহ পাশ্ববর্তী এলাকায় তাপপ্রবাহ চলমান রয়েছে। গত কয়েকদিন ধরে সেটি আরও বেড়ে তাপমাত্রা ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস থেকে ৩৯ দশমিক ৮ ডিগ্রি পর্যন্ত উঠানামা করছে। ৬ (এপ্রিল) সেটি তীব্র ৪০ ডিগ্রী তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়।

আজ বুধবার (১৭ এপ্রিল) ঈশ্বরদীতে তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৪০ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এটি চলতি মৌসুমের ঈশ্বরদীর সর্বোচ্চ তাপমাত্রা। এছাড়া আরও অন্তত ৩-৪ দিন তাপমাত্রা বাড়তে পারে। এ সময়ের মধ্যে এ অঞ্চলে কোনো বৃষ্টি হওয়ার সম্ভবনা নেই। তবে কালবৈশাখী বয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে বলে জানানো হয়েছে।

ফুলকি,তাপমাত্রা
আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত